শব্দদূষণে মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ও পরিত্রাণের উপায় নিয়ে লিখেছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের ইএনটি অ্যান্ড হেড নেক, সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু
যেকোনো ধরনের অস্বস্তিকর, অপ্রয়োজনীয় অথবা অপ্রত্যাশিত শব্দকে শব্দদূষণ বলা হয়। নাগরিক জীবনে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ ঘটছে সড়ক পরিবহনের ক্ষেত্রে। নিয়মিত হর্ন চেপে ধরাকে ড্রাইভাররা ড্রাইভিংয়ের অপরিহার্য অংশ মনে করছে। অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত পরিমাণ হর্ন যত্রতত্র ব্যবহৃত হচ্ছে; হাইড্রলিক হর্ন এখন অনেক গাড়িতে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে মাইকিং ও বৈদ্যুতিক জেনারেটর চালানোর সময়ও অসহ্য শব্দদূষণ হয়ে থাকে।
শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিক : শব্দদূষণের ফলে শ্রবণশক্তি ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়ে থাকে এবং একপর্যায়ে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। শ্রবণশক্তির মারাত্মক ক্ষতি ছাড়াও শব্দদূষণের ফলে শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আক্রান্ত হয়। উচ্চ শব্দের ফলে নিদ্রাহীনতা হয়, রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, হজম ঠিকমতো হয় না। এতে মায়ের পেটের সন্তানের ক্রমবৃদ্ধিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, উল্লেখযোগ্য নগরবাসীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এই উচ্চ শব্দ। উচ্চ শব্দের কারণে শরীরে ইপিনেপ্রিন ও নরইপিনেপ্রিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা হৃদযন্ত্র ও রক্তনালিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। শব্দদূষণযুক্ত এলাকাবাসী শব্দদূষণমুক্ত এলাকাবাসীর চেয়ে ঢের বেশি এন্টাসিড, ঘুমের ওষুধ, ব্লাড প্রেসারের ওষুধ সেবন করেন। উচ্চ শব্দের প্রভাবে মানুষের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শব্দদূষণের মাত্রা : সাধারণত ‘ডেসিবেল’ নামক একক দিয়ে শব্দ মাপা হয়। শূন্য (০) ডেসিবেল হলে সবচেয়ে কম যে শব্দ একজন মানুষ শুনতে পায়, ফিসফিস শব্দে থাকে ২ ডেসিবেল। সাধারণ কথাবার্তায় থাকে ৬০ ডেসিবেল। ১২০ ডেসিবেলের শব্দ হলে অস্বস্তি লাগে, আর ১৪০ ডেসিবেলে শব্দ হলে রীতিমতো ব্যথা শুরু হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ সমিতিগুলোর মতে, বাসাবাড়িতে দিনের বেলায় ৪৫ ডেসিবেল এবং রাতের বেলা ৩৫ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ স্বাস্থ্যসম্মত। আইন অনুযায়ী, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ডেসিবেল এবং রাতে ৬০ ডেসিবেল, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫০ ডেসিবেল রাতে ৪০ ডেসিবেল এবং শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ ডেসিবেল এবং রাতে ৭০ ডেসিবেল শব্দ সহনীয় মাত্রা হিসেবে নির্ধারিত আছে। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকায় যেসব গাড়ি চলাচল করে, সেগুলোর হর্ন ১৪০ ডেসিবেলের ওপরে। অথচ চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী, ৭৮-৮৫ ডেসিবেলের বেশি শব্দ শ্রবণশক্তি এবং স্বাস্থ্যের জন্য সুস্পষ্টভাবে ক্ষতিকারক।
শব্দদূষণ থেকে পরিত্রাণের উপায় : প্রধানতম উপায় হলো ড্রাইভারদের যথোপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ। সেই সঙ্গে মালিকদেরও এ ব্যাপারে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। তবে সবচেয়ে জরুরি হলো, প্রয়োজন ব্যতীত হর্ন বাজানো আইন করে নিষিদ্ধ করা।
রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে ইচ্ছামতো মাইকের ব্যবহার হয়ে থাকে। এতে শব্দজনিত সাধারণ ক্ষতি ছাড়াও এলাকার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও অসুস্থ রোগীদের বিশ্রামে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। নগরবাসীর ঘুমে সমস্যা হয়। যত্রতত্র মাইকিং অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। শিল্প ও কলকারখানার শব্দদূষণ এড়ানোর জন্য যথাযথ পরিকল্পনা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি, শিল্প কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের নিয়মিত শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করাতে হবে। কর্মঘণ্টা শব্দসীমা অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। যেমন ৮৫ ডেসিবেল শব্দ উৎপন্নকারী শিল্পে কর্মঘণ্টা সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা হবে, আবার এর চেয়ে প্রতি ৩ ডেসিবেল বাড়লে কর্মঘণ্টা অর্ধেক করে দিতে হবে।
শব্দদূষণের মাত্রা : সাধারণত ‘ডেসিবেল’ নামক একক দিয়ে শব্দ মাপা হয়। শূন্য (০) ডেসিবেল হলে সবচেয়ে কম যে শব্দ একজন মানুষ শুনতে পায়, ফিসফিস শব্দে থাকে ২ ডেসিবেল। সাধারণ কথাবার্তায় থাকে ৬০ ডেসিবেল। ১২০ ডেসিবেলের শব্দ হলে অস্বস্তি লাগে, আর ১৪০ ডেসিবেলে শব্দ হলে রীতিমতো ব্যথা শুরু হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ সমিতিগুলোর মতে, বাসাবাড়িতে দিনের বেলায় ৪৫ ডেসিবেল এবং রাতের বেলা ৩৫ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ স্বাস্থ্যসম্মত। আইন অনুযায়ী, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ডেসিবেল এবং রাতে ৬০ ডেসিবেল, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫০ ডেসিবেল রাতে ৪০ ডেসিবেল এবং শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ ডেসিবেল এবং রাতে ৭০ ডেসিবেল শব্দ সহনীয় মাত্রা হিসেবে নির্ধারিত আছে। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকায় যেসব গাড়ি চলাচল করে, সেগুলোর হর্ন ১৪০ ডেসিবেলের ওপরে। অথচ চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী, ৭৮-৮৫ ডেসিবেলের বেশি শব্দ শ্রবণশক্তি এবং স্বাস্থ্যের জন্য সুস্পষ্টভাবে ক্ষতিকারক।
শব্দদূষণ থেকে পরিত্রাণের উপায় : প্রধানতম উপায় হলো ড্রাইভারদের যথোপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ। সেই সঙ্গে মালিকদেরও এ ব্যাপারে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। তবে সবচেয়ে জরুরি হলো, প্রয়োজন ব্যতীত হর্ন বাজানো আইন করে নিষিদ্ধ করা।
রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে ইচ্ছামতো মাইকের ব্যবহার হয়ে থাকে। এতে শব্দজনিত সাধারণ ক্ষতি ছাড়াও এলাকার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও অসুস্থ রোগীদের বিশ্রামে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। নগরবাসীর ঘুমে সমস্যা হয়। যত্রতত্র মাইকিং অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। শিল্প ও কলকারখানার শব্দদূষণ এড়ানোর জন্য যথাযথ পরিকল্পনা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি, শিল্প কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের নিয়মিত শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করাতে হবে। কর্মঘণ্টা শব্দসীমা অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। যেমন ৮৫ ডেসিবেল শব্দ উৎপন্নকারী শিল্পে কর্মঘণ্টা সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা হবে, আবার এর চেয়ে প্রতি ৩ ডেসিবেল বাড়লে কর্মঘণ্টা অর্ধেক করে দিতে হবে।
No comments:
Post a Comment