আইসিটি ওয়ার্ল্ড নিউজ ডেস্ক :
শহর লন্ডনে তৃতীয়বারের মতো অলিম্পিক আয়োজন। আর এমন আয়োজনে শরিক হওয়ার কোনো স্মারক চিহ্ন কে না রাখতে চাইবে! তাই লন্ডন অলিম্পিক ও প্যারা-অলিম্পিক নিয়ে আলাদা পাঁচ পাউন্ড সমমানের স্মারকমুদ্রা বের করার প্রস্তুতি নেয় ব্রিটিশ মুদ্রা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান দ্য রয়েল মিন্ট। অলিম্পিকের স্মারক মুদ্রার নকশার জন্য যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্ট অ্যান্ড ডিজাইনের শিক্ষার্থীদের উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল প্রতিযোগিতাটি। বিজয়ী হয়ে ব্যাপক আলোচিত হন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি তরুণ সায়মান মিয়া। কয়েক হাজার নকশার মধ্য থেকে নির্বাচিত হয় তাঁর নকশাটি। সায়মান বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী। তাঁর নকশা করা অলিম্পিক ২০১২ সালের স্মারকমুদ্রাটি এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীজুড়ে।
অলিম্পিক ইতিহাসের অংশ হওয়া সায়মান বলছিলেন, ‘স্থাপত্যশৈলী নিয়ে পড়াশোনা করছি, ড্রয়িং বরাবরই পছন্দের। স্কুলের একজন শিক্ষক প্রতিযোগিতাটি সম্পর্কে জানিয়ে অংশ নিতে বললেন। তার পরও বিষয়টি আমার মাথায়ই ছিল না। এক মাঝরাতে হুট করে আমার ঘুম ভেঙে গেলে নকশাটি আমার মাথায় আসে। দেরি না করে পেনসিল দিয়ে একটু সাজিয়ে রেখেছিলাম। আবার ভুলে বসি। ভাগ্যিস, শেষতক জমা দিতে পেরেছিলাম।
মুদ্রার নকশা নিয়ে আমার ভাবনায় প্রাধান্য ছিল ব্রিটিশ স্থাপত্যের সঙ্গে ক্রীড়ার নিবিড় সমন্বয় ঘটানো। মুদ্রার নকশায় স্থান পেয়েছে ব্রিটেনের নান্দনিক স্থাপত্যকর্ম বিগ বেন, লন্ডন আই, সেন্ট পল ক্যাথিড্রেল ইত্যাদি। এদিকে নকশা জমা দেওয়ার পর আর কোনো খবর নেই, আর এমনটা হবে, সে তো জানাই ছিল। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি ঘরের মানুষ ছাড়া কাউকে বলিওনি। এরপর আসে চমক। দ্য রয়েল মিন্টের কর্মকর্তা কেভিন ফোন করে বলেন, আমার আঁকা নকশায় তৈরি হবে লন্ডন অলিম্পিকের স্মারকমুদ্রা!’
১৯৫৫ সালে ব্রিটেনে আসেন সায়মানের বাবা আরজু মিয়া। চার ভাইবোনের পরিবারে গর্বিত মা পিয়ারা খাতুন সায়মানের সাফল্যে প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘পূর্বপুরুষের মাটির গল্প শুনেই তারা বড় হয়েছে। আমার সন্তানের এই স্বীকৃতি বাংলাদেশিদের মুখ উজ্জ্বল করবে বলে জানি; আমি খুবই খুশি।’
১০ বছর বয়সে শেষবার বাংলাদেশে গিয়ে থাকলেও ভাটা পড়েনি দেশের প্রতি টান। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আত্মবিশ্বাসী হয়ে সায়মান জানান, ‘সুযোগ পেলে দেশে গিয়ে কাজ করার প্রচণ্ড ইচ্ছা আছে আমার।’
No comments:
Post a Comment