Sunday, February 12, 2012

আইনস্টাইনকে পূর্ণতা দিচ্ছেন রাবির গবেষক!!!

আইনস্টাইনকে পূর্ণতা দিচ্ছেন রাবির গবেষক!!! আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ভুল নয়, অসম্পূর্ণ- এটি প্রমাণ করতে ও নতুন সমীকরণের মাধ্যমে আপেক্ষিকতা তত্ত্বকে সম্পূর্ণ করার স্বপ্ন নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গতকাল শনিবার থেকে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সেমিনার। এই স্বপ্নের দুই মূল চরিত্র হলেন রাবির শিক্ষক অধ্যাপক ওসমান গনি ও অধ্যাপক মুসফিক আহমেদ। গতকাল সেমিনারের প্রথম দিনে 'স্পেশাল রিলেটিভিটি' (বিশেষ আপেক্ষিকতা) বিষয়ে মোট আটটি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়েছে। আজ রবিবার উপস্থাপিত হবে আরো দুটি প্রবন্ধ। এই সেমিনারে দেশি-বিদেশি ১৫০ জন গবেষক অংশ নিয়েছেন। ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ফারহানা বিনতে সুফীর উপস্থাপনায় ও রাবির উপাচার্য অধ্যাপক এম সোবহানের সভাপতিত্বে গতকাল সকাল ৯টা থেকে সেমিনারের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনে বিশেষ আপেক্ষিকতা সম্পর্কে অধ্যাপক ওসমান গণি ও অধ্যাপক মুসফিক আহমেদ তাঁদের প্রায় দুই দশকের গবেষণালব্ধ ফলের ওপর চারটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় দুপুর ২টায়। সেখানে এই দুই গবেষক আরো চারটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আজ তাঁরা আরো দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। সেমিনারে এই দুই গবেষক বলেন, বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মতবাদ থেকে স্থান-সংকোচন, সময়ের বিস্তার, বস্তুর পরিবর্তন ইত্যাদি সংক্রান্ত কিছু সমীকরণ পাওয়া যায়। তাঁরা বলেন, আপেক্ষিকতা সূত্রে বিজ্ঞানী আইনস্টাইন গাণিতিক সূত্র প্রয়োগ করে শুধু একটি অবস্থাকেই দেখিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে দুটি অবস্থানে দুটি সূত্র দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁরা বলেন, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন ও বিজ্ঞানী লরেন্স শুধু বেগের ক্ষেত্রে যোগসূত্রটি দেখিয়েছেন। কিন্তু সময়, দৈর্ঘ্য, স্থান, ভর, ভরবেগ, শক্তি- এগুলোরও যে যোগসূত্র হয়, তা তাঁরা (ওসমান গণি তালুকদার ও মুসফিক আহমেদ) আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন এসবের একটিরও গুণসূত্র দেননি। কিন্তু এগুলোরও যে গুণসূত্র হয়, তাও তাঁরা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। এ ছাড়া এসবের যে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মান রয়েছে, তা বিজ্ঞানী আইনস্টাইন বলে যাননি। কিন্তু তাঁরা গবেষণা করে আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন যে এগুলোরও সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মান রয়েছে। গবেষকরা বলেন, দীর্ঘ দুই দশক ধরে গবেষণা করে এ-সংক্রান্ত যে তিনটি সমীকরণ তাঁরা আবিষ্কার করেছেন, তা আপেক্ষিকতা বিষয়ে আইনস্টাইনের মতবাদের বিরোধিতা করে না, বরং আইনস্টাইনের মতবাদকে পূর্ণতা দেবে। তাঁদের আবিষ্কৃত এই সমীকরণগুলো কোয়ান্টাম মেকানিকসের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে বলে তাঁরা উল্লেখ করেন। সেমিনার শেষে গবেষকরা বলেন, অধ্যাপক ওসমান গণি ও অধ্যাপক মুসফিক আহমেদ যদি তাঁদের দাবি প্রমাণ করতে পারেন, তবে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এই বিষয়ে আরো প্রচারের দরকার আছে বলে তাঁরা মনে করেন। তাঁরা আরো বলেন, এই বিষয়ে আরো সেমিনার করার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ যাঁরা এই বিষয়ে উচ্চতর গবেষণা করেন, তাঁদের অংশগ্রহণ এখানে কম। যাঁরা এসেছেন, তাঁরা সবাই এই বিষয়ের গবেষক নন বলে অংশ নেওয়া গবেষকরা মন্তব্য করেন। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সবচেয়ে বড় কথা হলো, তাঁরা (অধ্যাপক ওসমান গণি ও মুসফিক আহমেদ) যে সমীকরণই দেন না কেন, তা পুরো বিজ্ঞানজগতে গ্রহণীয় হতে হবে।' রাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সালেহ হাসান নাকিব বলেন, 'সমীকরণ গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো সমীকরণগুলোকে ব্যবহারিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করা। তাঁরা যে চিন্তা করেছেন, তা প্রশংসার দাবি রাখে। তবে আমি মনে করি, তাঁদের চিন্তা-ভাবনা বা গবেষণা এখনো অপরিপক্ব।' একই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আবদুল্লাহ শামস বিন তারিক কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি যতটুকু দেখেছি, তাতে আমি সন্তুষ্ট না। আমার মনে হয় না তাঁদের গবেষণা খুব বেশি দূর এগোতে পারবে।

No comments:

Post a Comment